জেডএসআই-এর প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন

জেডএসআই-এর প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন 
সাজাহান সিরাজ : জ্যুলজিক্যাল সার্ভে অফ্ ইন্ডিয়া---ভারতীয় প্রাণী সর্বেক্ষণ, তাদের ১০৯ তম প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন করবে আগামী ৩০ জুন, রবিবার। এই উপলক্ষে পয়লা জুলাই থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত তিনদিনব্যাপী এক প্রাণী শ্রেণীবিন্যাস শীর্ষ সম্মেলন ২০২৪ অর্থাৎ Animal Taxonomy Summit 2024 এর আয়োজন করা হয়েছে বিশ্ববাংলায়। যেখানে ভারতসহ পাঁচটি দেশের প্রায় ৩৫০ জন গবেষক অংশ নেবেন। কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন এবং জলবায়ু পরিবর্তন দপ্তরের মন্ত্রী ভূপেন্দর যাদব জেডএসআই -এর প্রতিষ্ঠা দিবস এবং শীর্ষ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন ওই দপ্তরের কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিং, বন বিভাগের মুখ্য অধিকর্তা এবং বিশেষ সচিব জিতেন্দ্র কুমার প্রমুখ।
কলকাতা প্রেসক্লাবে ২৬ জুন এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই সংবাদ জানিয়ে কলকাতাস্থিত জ্যুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার অধিকর্তা ডঃ ধৃতি ব্যানার্জি বলেছেন, শুধু মানুষ নয়, এবার কীটপতঙ্গ, উদ্ভিদ এবং জীবজন্তুদেরও আধার কার্ড তৈরি করা হবে। জ্যুলজিক্যাল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া (জেডএসআই) এবং বোটানিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (বিএসআই) এই আধার কার্ড তৈরি করবে। আধার কার্ডে প্রতিটি প্রজাতির নাম-ধাম, ছবি, বিবরণ সবই থাকবে। ঠিক, যেমনটা মানুষের আধার কার্ডে পাওয়া যায়। তবে ব্যাংকে গিয়ে অ্যাকাউন্ট বইয়ের সঙ্গে আধার কার্ডের নম্বর লিংক করাতে হবে না, এই যা ! বিশ্বের প্রথম দেশ হিসাবে ভারতবর্ষ এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত সমস্ত জীবকুল এবং উদ্ভিদের ডিজিটাল ক্যাটালগ তৈরি করছে, সেখানে কোনো প্রাণীর প্রোফাইলে গিয়ে যাবতীয় তথ্য পেতে পারবেন আগ্রহীরা। এই আধার কার্ডের পোশাকি নাম হচ্ছে 'ফনা অফ ইন্ডিয়া চেকলিস্ট পোর্টাল'।
এই শীর্ষ সম্মেলনে জেডএসআই কলকাতা এবং আইসিএআরএনবিএফজিআর এর যৌথ সম্পাদনায় 'বারকোড অ্যাটলাস অফ ইন্ডিয়ান ফিশেস' নামে একটি বইও প্রকাশিত হবে। ওই বইয়ে ভারতীয় সমস্ত মাছের বারকোড সম্বলিত ছবি ও তথ্যাদি থাকবে।
জেডএসআই -এর অধিকর্তা আরও জানিয়েছেন, অনেক কীট পতঙ্গের ক্ষেত্রে বেশ কিছু মিসিং লিংক আছে। হয়তো কয়েক'শো বছর আগের নথি রয়েছে। আবার খুব আধুনিক সময়ের নথিও হাতে আসছে। মাঝের সময়গুলির তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, বিদেশের মিউজিয়ামে সেগুলির নথি সংরক্ষিত রয়েছে। সেই কারণে লন্ডনের মিউজিয়াম অফ ন্যাচারাল হিস্ট্রির সঙ্গে একটি মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে জেডএসআই -এর। বার্লিন মিউজিয়ামের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। এমনকী, এসব তথ্য সংগ্রহের জন্য পাকিস্তানের বিজ্ঞানীদের সঙ্গেও ব্যক্তিগত স্তরে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। সেখানকার মূল্যবান ছবির প্রতিলিপি এবং ডিজিটাল নথি নিয়ে আসা হবে এখানে। তিনি জানান, ২০২৩ সাল জুড়ে প্রায় ৬০০টি প্রাণী এবং ৩০০টি নতুন ধরনের প্রাণীর খোঁজ পাওয়া গেছে ভারতবর্ষে। তা নিয়ে একটি সংকলন 'অ্যানিম্যাল ডিসকভারিজ-২০২৩' নামে একটি পুস্তিকা প্রকাশিত হবে সম্মেলনে। এরই পাশাপাশি ভারতের কীটপতঙ্গ, লাক্ষাদ্বীপের জীববৈচিত্র্য, গোয়ার পাখিজগৎ, সব ধরনের মাছির ক্যাটালগ প্রভৃতিও প্রকাশিত হবে সম্মেলনে। 
বনমন্ত্রকের উদ্যোগে অনুষ্ঠানে আগতদের একটি করে গাছের চারা দেওয়া হবে। সেটির সঙ্গে থাকবে একটি ট্যাগ। সেখানে নিজের মায়ের নাম লিখে পছন্দের জমিতে বসিয়ে সেটির পরিচর্যা করে বড় করতে পারবেন তাঁরা।
ডঃ ধৃতি ব্যানার্জি বলেন, বিজ্ঞানীদের এই নিরলস অক্লান্ত পরিশ্রম, অধ্যবসায়, অসাধ্য সাধন, যুদ্ধ জয়ের থেকে কোন অংশে কম কিছু না।

Comments

Popular posts from this blog

পুজো ছোটো ভাবনা বড়ো। আদর্শ পল্লীর আদর্শ পুজো।

কলকাতা কাঁপাতে এলেন ভারতনাট্যমের বিশ্বখ্যাত নৃত্যশিল্পী গীতা চন্দন

মিলনবাজারে অঙ্কন উৎসব