অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস এ অনুপম হালদারের একক আলোকচিত্র প্রদর্শনী
অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস এ শুরু হল অনুপম হালদারের একক আলোকচিত্র প্রদর্শনী
সাজাহান সিরাজ, কলকাতা ২৮ সেপ্টেম্বর -::- সদালাপি মানুষটি আজ আর একা নন। ইদানিং কলকাতা শহর এবং শহরতলির বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে, সাংস্কৃতিক মঞ্চে সস্ত্রী দেখা যায় তাঁকে। মিশুকে এই দম্পতির ঠোঁটে সব সময় যেন হাসি জড়িয়ে থাকে । যেচে কুশল বিনিময় করেন । খোঁজ খবর নেন প্রত্যেকের। মনে হয় কত দিনের আলাপ পরিচয়।
সদালাপি এই দম্পতি সরকারি আধিকারিক। দুদে আমলা। আলাপ হলে বুঝবেন, এই আধিকারিক, এই আমলার তকমাটা শুধুমাত্র সরকারি অফিসের চার দেওয়ালেই বন্দি। অফিসের বাইরে তাঁরা সম্পূর্ণ আলাদা মানুষ । মনে হবে তাঁরা আমাদের খুব কাছের মানুষ । স্বজন। অনুপম হালদার ও পাঞ্চালি মুন্সি।
অনুপমবাবুর পেশার বাইরে তাঁর একটা আলাদা জগৎ আছে। বলতে পারেন নেশা। যে নেশাকে কিশোর বয়স থেকে আজও সন্তান স্নেহে আগলে রেখেছেন তিনি । সেই নেশার টানে কখনো সাগর থেকে পাহাড়, এমনকি সময় পেলে দেশ থেকে বিদেশের সৌন্দর্যের মধ্যে নতুনের খোঁজ করেন তিনি । সবসময় তাঁর অমৃতের সন্ধান ।
কিশোর বয়সে এক স্বজন তাঁর হাতে তুলে দিয়েছিলেন একটি ক্যামেরা । সাদামাটা। আজ অনেক দামি, নামি কোম্পানির ক্যামেরা তাঁর হাতে। সেই ক্যামেরা নিয়ে ভালো আরো ভালো দৃশ্য ক্যামেরা বন্দি করার জন্য দৌড়ে বেড়ান এ প্রান্ত থেকে সে প্রান্ত। অনেকটাই ওই অমৃতের সন্ধানের মতই ।
এই স্বজন, অনুপম হালদারের নিজের সেরা ১২৫ টি আলোকচিত্রের একক প্রদর্শনী শুরু হয়েছে কলকাতার অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস-এ গত শুক্রবার, ২৮ সেপ্টেম্বর।
ক্রিয়েটিভ ফটোগ্রাফি এক্জিবিশন নামের এই আলোকচিত্র প্রদর্শনী অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস-এর 'নিউ সাউথ এ' এবং 'নিউ সাউথ বি' দুটি গ্যালারিতে চলবে আগামী ৬ অক্টোবর পর্যন্ত। এটি আলোকচিত্রী অনুপম হালদার-এর সপ্তম একক আলোকচিত্র প্রদর্শনী।
এদিন সন্ধ্যায় বিশিষ্ট অভিনেতা বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, অচ্চ্যুৎ চ্যাটার্জী, অভিনেত্রী অনামিকা সাহা, মৌবনী সরকার, চিত্রকর দিবাকর চক্রবর্তী, সুজিতকুমার ঘোষ, হাওড়া পৌরনিগমের অন্যতম পৌরপ্রতিনিধি সীমা ভৌমিক, দেব সাহিত্য কুটির-এর কর্ণধার রাজিকা মজুমদার, আলোকচিত্রী মধু সরকার, অতনু পাল সহ বিশিষ্ট জনের উপস্থিতিতে মঙ্গল দীপ প্রজ্জ্বলিত করে শুরু হয় এই আলোকচিত্র প্রদর্শনী।
অন্য রাজ্য ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সম্মানে ভূষিত অনুপম হালদার এদিন স্ত্রী পাঞ্চালি মুন্সির পাশে দাঁড়িয়ে স্মৃতিমেদুর হয়ে জানান, "সদ্য কৈশোরে পা দিয়ে স্বজনের হাত থেকে পেয়েছিলাম প্রথম ক্যামেরা। সেদিনের সেই ক্যামেরাই আমাকে জগৎকে নতুন ভাবে দেখতে শিখিয়েছিল। আজ হয়তো আমি অনেক দামি ক্যামেরা ব্যবহার করি, কিন্তু সেদিনের সেই মুহূর্ত আজ আমাকে আলো আঁধারি নিয়ে ক্যামেরায় ছবি আঁকতে শিখিয়েছে।"
আগ্রহী সাধারণ মানুষ, আলোকচিত্র প্রেমী প্রতিদিন অপরাহ্ন ৩ টে থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত এই প্রদর্শনী ঘুরে দেখতে পারবেন।
Comments